Header Ads

সর্বশেষ

আয়েশা মুমিনদের গলার কাটা!

মুমিনদের ধারণা তাদের ঈমান দণ্ড কোনরকমে মেয়েদের শরীরে প্রবেশ করাতে পারলেই মেয়েটি যুবতী হয়ে গেছে, সে বিয়ের উপযুক্ত এবং তার পেটে বাচ্চা পুরে দেওয়ার উপযুক্ত । মুমিনদের এমন ধারণার কারণ হলো আয়েশা । আয়েশা মুমিনদের গলার কাটা । আর এই কাটা ছাড়াতে মুমিনরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকমের তত্ত্ব দিয়ে থাকেন । আর এই তত্ত্ব দিতে গিয়ে তারা নিজের ধর্মের ইতিহাস কেউ বিকৃত করতে পিছপা হন না । এটা একই সাথে হাস্যকর এবং দুঃখজনক যে, মুমিনরা এমন এক জাতি যাদের বোঝাতে হয় যে ৬ বছরের একটি মেয়ে শিশু হয় । আগে মুমিনদের এটা নিয়ে কোন মাথাব্যথা ছিলো না কিন্তু এখন আধুনিক যুগে যখন সমাজ আয়েশা কে নিয়ে মুহাম্মদের চরিত্রের উপর প্রশ্ন তুলতে শুরু করলো তখন তারা নবী বাচাতে ৬ বছরের একটি মেয়েকে টেনে টুনে যুবতী বানাতে ব্যস্ত । তাদের আপ্রাণ চেষ্টা আয়েশা কে শিশু থেকে যুবতী বানানোর । চলুন সেই চেষ্টা কতোটা সত্য তা খতিয়ে দেখা যাক । প্রথমে চলুন দেখি আয়েশা যদি নাবালিকা শিশু হয় তাহলে আল্লার কোন অসুবিধা আছে কিনা ? প্রথমে আমরা কোরানের দিকে নজর দেই ।

[সূরা আন নিসা ৪:৬]

“আর এতিমদের প্রতি বিশেষ নজর রাখবে, যতক্ষণ না তারা বিয়ের বয়সে পৌঁছে ।”

তাহলে কোরআন মতে বিয়ের জন্য একটা বয়স আছে । কিন্তু সেটা কতো ? সেটা কোরানের কোথাও উল্লেখ নেই । তবে নারীদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স কতো হতে পারে সে ব্যাপারে কোরানের আরেকটি আয়াত থেকে ধারণা পাওয়া যায় ।

[সূরা আত্ব ত্বালাক্ব ৬৫:৪]

“তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের ঋতুবর্তী হওয়ার আশা নেই, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস। আর যারা এখনও ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি, তাদেরও অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে।”

[তাফসির ইবন-কাসির]

ref-2.jpgএকটি মেয়ে তালাক প্রাপ্ত হওয়ার পর আবার বিয়ে করার জন্য যে সময়টুকু অপেক্ষা করতে হয় তাকে ইদ্দত বলে । তাহলে এখানে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে কোরআন মতে এমন মেয়েকেও বিয়ে করা যায় যার আজো ঋতুস্রাব শুরু হয়নি । মেয়েদের ঋতুস্রাব এবং ছেলেদের বীর্যপাত এই দুটি বিষয় কেই একটি শিশুর শৈশব থেকে কৈশোরে পা দেওয়ার প্রথম ধাপ হিসেবে ধরা হয় । তার আগ পর্যন্ত সময়য় কে শিশুকাল হিসেবে ধরা হয় । তাহলে কোরআন মতে একটি শিশুকেও বিয়ে করা যেতে পারে তবে একেবারে গ্যদা বাচ্চা নয় । তাহলে বয়সটা কেমন হবে ? এক্ষেত্রে মুমিনদের মতে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ এবং যাকে সর্বকালে সমগ্র পৃথিবীর মানুষের জন্য অনুকরণীয় বলা হয়, সেই মুহাম্মদ কে উদাহরণ হিসেবে নেওয়া যাক । মুহাম্মদ আয়েশা কে বিয়ে করেন যখন আয়েশার বয়স ৬ বছর এবং মুহাম্মদের বয়স তখন ৫৩ । অর্থাৎ কোরআন এবং নবীর সুন্নত মতে বর্তমানে আমাদের শিশুরা যে বয়সে অ আ ক খ পড়া শুরু করে এবং প্লে অথবা নার্সারি ক্লাসে ভর্তি হয় সেই প্লে বা নার্সারি ক্লাসের মেয়েদেরো বিয়ে করা যায় । চিন্তা করুন তো অ আ ক খ পড়া একটি মেয়ে পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব একটি বৃদ্ধের বৌ । আসলে একজন আধ্যাত্মিক নেতাকে আমাদের পক্ষে এভাবে কল্পনা করা কষ্টকর ।

যাইহোক… আমাদের দেশে বর্তমানে গনতান্ত্রিক আইনে মুহাম্মদ আয়েশার এই বিয়ে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ কারণ একটি শিশুর ভালো মন্দ বিচার করারা বা নিজের বিয়ের অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা থাকে না । এই বয়সী একটি শিশু কে বিয়ে করা বা তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করা কে ধর্ষণ হিসেবে ধরা হয় । কারণ ধর্ষণের একটি সংজ্ঞা হচ্ছে বিচার বুদ্ধি নেই বা বিবেচনা করার ক্ষমতা নেই এমন কারো সাথে শারীরিক সম্পর্ক করা । ধরুন একটি মেয়ে যদি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হয় বা পাগল হয় তখন তার সম্মতিতে হলেও যদি কেউ তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে তবে সেটাকে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয় । কারণ শারীরিক সম্পর্কের অনুমতি দেওয়ার মতো মানসিক ক্ষমতা একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বা পাগলের থাকে না আর এই একই বক্তব্য শিশুদের ক্ষেত্রেও খাটে কারণ শিশুদেরো নিজেদের সম্পর্কে সম্মতি দেওয়ার ক্ষমতা থাকে না । সুতরাং মুহাম্মদ যদি বর্তমান সময়ে আয়েশা কে বিয়ে করতেন তাহলে বাল্যবিবাহের সাথে সাথে ধর্ষণের কেসও খেতেন । যাইহোক… এবার মুমিনরা মুহাম্মদ কে বাচাতে যে কুতর্ক আনে সেটা নিয়ে কথা বলি । মুমিনীয় যুক্তি হলো আয়েশা সেই সময় অর্থাৎ ৬ বছর বয়সে যুবতী ছিলো । তাহলে আয়েশা সেই বয়সে যুবতী ছিলো না আর দশটা মেয়ের মতো স্বাভাবিক শিশু ছিলো তার জন্য কয়েকটি প্রমাণ বিবেচনা করা যাক ।

[THE HISTORY OF AL-TABARI VOLUME 09 PAGE 128]

Ref 1 Tabari P128

অনুবাদঃ “যখন তিনি (মুহাম্মদ) আয়েশা কে বিয়ে করেন তখন তিনি খুবই ছোট এবং বিয়ে পরিপূর্ণ করার যোগ্যা ছিলেন না

অর্থাৎ মুহাম্মদ তখন আয়েশার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করলে আয়েশার শারীরিক ক্ষতি হতো । অর্থাৎ মুহাম্মদ একটি শিশু কে বিয়ে করেছেন । এটা পানির মতো পরিষ্কার যে আয়েশা সেই সময় শিশু ছিলো । এবার মুমিনরা নিশ্চয় বলবেন না যে, যে মেয়ের সাথে শারীরীক সম্পর্ক করলে মেয়েটির শারীরিক ক্ষতি হতে পারে সেই মেয়েটি যুবতী ! এখন মুমিনীয় দ্বিতীয় যুক্তি হলো এজন্য মুহাম্মদ তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেননি এবং ৩ বছর অপেক্ষা করে তাকে বাপের বাড়িতে রেখে ৯ বছরে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন । এখানে প্রথম কথা হলো, তাহলে মুহাম্মদ আয়েশা কে মাত্র ৬ বছর বয়সে বিয়ে করলেন কেনো ? কিসের এতো তাড়া ছিলো মুহাম্মদের ? দ্বিতীয় কথা হলো মাত্র ৩ বছরেই কি আয়েশা যুবতী হয়ে গেছিলো । মুহাম্মদের লিঙ্গ কোনমতে আয়েশার শরীরে ফিটি হলেই কি আয়েশা যুবতী হয়ে গেলো ? মুহাম্মদের আয়েশার সাথে বাসর করার সময়য় আয়েশার কি অবস্থা ছিলো সেটা দেখা যাক ।

[THE HISTORY OF AL-TABARI VOLUME 09 PAGE 131]

ref-3-tabari-p131.jpg

অনুবাদঃ “আল্লার নবী আমাদের বাড়ি আসেন এবং তার সাথে আনসার নারী, পুরুষরাও জড়ো হয় । আমি দুইটি গাছের ডালে বাধা দোলনাতে দোল খাচ্ছিলাম এমন সময়য় আমার মা আমার কাছে আসে এবং আমাকে নিচে নামিয়ে আনে । আমার শিশু-পালয়িত্রী জুমায়মাহ আমাকে নিয়ে নেয় এবং পানি দ্বারা আমার মুখ মুছিয়ে দেয় এবং আমাকে নিয়ে এগোতে থাকে । আমি যখন দরজার কাছে পৌছায়, তখন সে দাঁড়িয়ে যায় যাতে আমি দম নিতে পারি । তারপর আমাকে আনা হয় যখন আল্লার নবী আমাদের বিছানায় বসে ছিলেন । (আমার মা) আমাকে তার কোলে বসিয়ে দেন এবং বলেন “এরা তোমার আত্মীয়। আল্লাহ তোমাকে তাদের সাথে দয়া করুন এবং তাদেরকেও তোমার সাথে দয়া করুন!” তারপর পুরুষ এবং নারীরা উঠে দাড়ায় এবং (ঘর থেকে) চলে যায় । এরপর আল্লার নবী আমার সাথে আমার বাড়িতে  তার বিবাহ পরিপূর্ণ করেন যখন আমার বয়স নয় বছর ।”

[সহিহ বুখারী-৩৮৯৪]

 

ref-4-bh-3894.jpg

মুমিনীয় যুক্তি হলো ৬ বছরে না হোক ৯ বছরে আয়েশা যুবতী হয়ে গিয়েছিলো । কিন্তু ৯ বছরে একটি মেয়ে যুবতী হয় কিভাবে ? শুধুমাত্র আগে মুহাম্মদের লিঙ্গ আয়েশার শরীরে ফিট হতো না কিন্তু ৯ বছরে কোনরকমে ঠেসে ঠুসে ফিট করা যায় তারমানেই আয়েশা যুবতী ? আর, আয়েশার শরীরে তখন যে মুহাম্মদের লিঙ্গ ফিট হতো তারই বা কি প্রমাণ আছে ? মুহাম্মদ কিভাবে বুঝলো যে আয়েশা সঙ্গমের উপযুক্ত হয়ে গেছে ? কি কারণে মুহাম্মদ এতো তাড়াহুড়ো করে হুট করে এসে আয়েশার বাড়িতেই তার সাথে সঙ্গম করলো ? মুহাম্মদের আচমকা আয়েশার বাড়িতে আসা আয়েশা কে চমকে দিয়েছিলো ।

[সহিহ মুসলিম-৫১৬০]

Ref 5 BH-5160

 

মুহাম্মদের আয়েশা কে ভোগ করার সময়ও আয়েশা যে তখনো আর দশটা মেয়ের মতোই শিশু ছিলো তার আরো বহু প্রমাণ আছে । যেমন উল্লেখিত আল তাবারির ঘটনাতে দেখা যাচ্ছে আয়েশার জন্য তার বাড়িতে একজন শিশু পালিয়ত্রী ছিলো যার নাম “জুমায়মাহ” । শিশু পালিয়ত্রী কেবল শিশুদের জন্যই রাখা হয় । আবার, আয়েশা কে নিয়ে এনে মুহাম্মদের কোলে বসানো হয় যেটা একমাত্র শিশুদের বেলায়ই প্রযোজ্য হয় । এরপর আরো আছে । আয়েশা যখন মুহাম্মদের ঘরে আসে তখনো তার সাথে তার খেলার পুতুল ছিলো ।

[সহিহ মুসলিম-৩৩৭২]

Ref 6 SM-3372

মানুষের শৈশব থেকে যুব বয়সে পা দেওয়ার একটি লক্ষণ হলো তারা ছোট বেলার মতো পুতুল নিয়ে খেলা বা শিশুদের খেলাধুলা এগুলো করে না । কিন্তু যে মেয়ে পুতুল নিয়ে স্বামীর ঘরে আসে সেই মেয়েকে মুমিনরা কোন সেন্সে যুবতী বলে ? একটি মিথ্যা কে সত্য বানাতে আর কতো মিথ্যা বলবে মুমিনরা ? আয়েশা শুধু স্বামীর বাড়িতে পুতুল নিয়ে এসেছিলো তাই নয় স্বামীর বাড়ি গিয়েও সে পুতুল খেলা করতো ।

[সহিহ বুখারী-৬১৩০]

Ref 7 BH-6130

[সুনানে ইবনে মাজাহ-১৯৮২]

Ref 8 IM-1982

একটি জিনিষ খেয়াল করুন এখানে । আয়েশা যখন মুহাম্মদের ঘরে সেই সময়ে মূর্তি বা ছবি ইসলামে নিষিদ্ধ ও হারাম । কিন্তু আয়েশা মুহাম্মদের ঘরে পুতুল বানিয়ে খেলা করতো কারণ আয়েশা তখন শিশু ছিলো এবং শিশুরা পুতুল নিয়ে খেলা করবে এটাই স্বাভাবিক । মুহাম্মদের ঘরে একমাত্র আয়েশারই অনুমতি ছিলো পুতুল নিয়ে খেলা করা । এর পরেও কি মুমিনরা বলবে আয়েশা যুবতী ছিলো ? আয়েশা যে শিশু ছিলো তার আরো কিছু উদাহরণ ।

[সহিহ বুখারী-২৬৩৭]

ref-9-bh-2637.jpg

এটি একেবারে শিশু সুলভ আচরণ । আয়েশা মুহাম্মদের ঘরে শিশু ছিলো এবং অন্য শিশুদের মতোই তার পছন্দ ও চালচলন ছিলো । নিচের হাদিসটি খেয়াল করুন ।

[সহিহ বুখারী-৫২৩৬]

Ref 10 BH-5236

আয়েশা নিজেই সাক্ষী দিচ্ছে যে সে শিশু ছিলো । আর শিশুরা খেলাধুলা সবচেয়ে বেশী পছন্দ করে । আয়েশার বাইরে গিয়ে অন্য শিশুদের সাথে খেলা করার সুযোগ ছিলো না তাই সে তাদের খেলাধুলা দেখতে আগ্রহী ছিলো । এই হাদিসটি আসলে খুবই দুঃখজনক একটি হাদিস, কারণ শিশু হিসেবে আয়েশার তখন অন্য শিশুদের সাথে খেলাধুলা করার কথা ছিলো কিন্তু ৫০ ঊর্ধ্ব এর বুড়োর যৌন লালসার স্বীকার হয়ে আয়েশা মুহাম্মদের ঘরে মুহাম্মদের সেক্স টয় হিসেবে তার শৈশব কাটাচ্ছিলো । তাহলে আয়েশা কবে তার কৈশোর বয়সে পা দেয় ? এর উত্তরো হাদিস থেকে পাওয়া যায় ।

[সহিহ মুসলিম-২৮০৯]

Ref 10 SM-2809

মুহাম্মদ আয়েশার সাথে তার বিবাহ পূর্ণ করে ৬২২ অব্দে যখন আয়েশার বয়স ৯ এবং মুহাম্মদের আয়েশার সাথে হজে যাওয়ার এই ঘটনাটি ৬২৯ অব্দে অর্থাৎ আয়েশার যখন প্রথম ঋতু শুরু হয় তখন তার বয়স ১৫/১৬ বছর । মুমিনরা নিশ্চয় বলবেন না যে আয়েশার ঋতু শুরু হওয়ার আগেই আয়েশা যুবতী ছিলো ! অবশ্য মুমিনদের উপর আমার পুরো আস্থা আছে যে তারা নাবী বাচাতে সেটাও বলতে পারে । কিন্তু মুমিনদের কাছে আমার প্রশ্ন । যে ধর্ম, যে নবী বাচাতে আপনাদের মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া লাগে সেই ধর্ম বা নবী কি আসলেও বাঁচানোর যোগ্যা ? আপনারা কিসের জন্য লড়ছেন ?

No comments