Header Ads

সর্বশেষ

আর কত ছেলে শিশুকে ধর্মের ছায়াতলে বলাৎকার হতে হবে?

 


আমাদের দেশে কওমী মাদ্রাসাগুলোতে যে শত শত ছোট ছোট ছেলে শিশুরা বলাৎকারের শিকার হয়, তা নিয়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর আমি একটা লেখা লিখেছিলাম। সেখানে ১৫৪টি কমেন্টস এর মধ্যে মোটামুটি ১৫০ জনই আমার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালিও করেছে। তাছাড়া কওমী নিয়ে আমার বেশিরভাগ লেখাতেই দেখবেন যে মানুষ আমাকেই গালাগালি করে তা যতটাই বাস্তব এবং সত্য হোক না কেন।

আসলে মূল সমস্যা হচ্ছে আমি যে মাদ্রাসাগুলোকে নিয়ে লেখালেখি করি এতে কিছু মডারেট মুসলিম এবং কতিপয় মাওলানাদের সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। তাদের ভিতরের অনেক সত্য উন্মোচন হয়ে যাচ্ছে। আর যে কারণেই তারা আমাকে গালাগালি করে, সামনে পেলে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়ে থাকে। কিন্তু খারাপ লাগে তখনই, যখন দেখি সেই কতিপয় মুসলিম এবং নব্য মাওলানাদের দেখা দেখি এ যুগের কিছু ছেলে মেয়েরাও আমার লেখাতে রীতিমতো একই কাজ করে।

তবে যে বা যারা আমার এই কওমী মাদ্রাসায় পেছনে লেগে থাকা নিয়ে গালাগালি করেন, মেরে ফেলার হুমকি দেন। তাদের উদ্দেশে বলে রাখি, আমি এইসব মাদ্রাসাগুলোর ভেতরের খবর যতটুকু জানি তার ১০০ ভাগের ২০ ভাগও যদি আপনারা জানতেন, তাহলে হয়তো আপনারাও আমার মতই বলতেন, তাদের নিয়ে লেখালেখিও করতেন।

আমি মাদ্রাসার এরকম অনেক এতিম-মিসকিন ও দরিদ্র অনাথ শিশু-কিশোরদের সাথে কথা বলেছি, যারা কওমী মাদ্রাসায় এরকম নরপশু হুজুরের কাছে খুবই ভয়াবহ কায়দায় দিনের পর দিন বলাৎকারের শিকার হয়েছে। যাদেরকে নিয়ে আমি নিজেও লেখালেখি করতে পারিনা, কারণ তারা এখন অনেক বড় হয়ে গিয়েছে, সমাজে তাদের এখন একটি নাম রয়েছে। আর এজন্যই তারা আমাকে নিষেধ করেছে। তারাই আমাকে বলেছে যে কওমী মাদ্রাসার এই হুজুরগুলো কতটা ভয়াবহ।

আর এমনই একজন নরপশু হুজুর চট্টগ্রামের কওমী মাদ্রাসার শিক্ষক এই নাছির উদ্দিন। তিনি নাকি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হবার পর প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এভাবেই বলেন যে, “স্যার, ওরা তো খুব ছোট। তাই আমি সবসময় চেষ্টা করি যেন ওরা বেশি ব্যথা না পায়। আমি তো ওদের শিক্ষক, ওরা ব্যথা পেয়ে কান্নাকাটি করলে আমার খুব কষ্ট লাগতো”। বুঝতে পেরেছেন যে কতটা বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ হলে এমন নিকৃষ্ট কাজ করা পর এভাবে বলতে পারে!

এই নাছির নাকি ধর্ষণের জন্য দশ বছরের নিচে বয়সী ছেলে শিশুদেরকেই বেশি টার্গেট করতেন। যদি কোন শিশু আসতে রাজি না হতেন তাহলে তাকে নাকি বেধড়ক মারধোর করে বাধ্য করাতেন। আর যেহেতু সেখানে যারা থাকে তারা বেশিরভাগই হতদরিদ্র পরিবার থেকে আসা, তাই তাদের আসলে রাজি হওয়া ছাড়া আর কোনও উপায়ও থাকে না।

গতকাল এক মডারেট মুসলিমের সাথে আমার মাদ্রাসা নিয়ে লেখালেখির বিষয় নিয়ে অনেক্ষন কথা হয়েছে। তিনি আমার কাছে জানতে চাচ্ছেন যে আমি মাদ্রাসা নিয়ে যত খেলালেখি করি অন্য কোনও বিষয় নিয়ে কেন নয়?
তাছাড়া অন্য কেউ কি এসব দেখে না, নাকি আপনার চোখেই সব পড়ে?

তার এই পশ্নে আমার উত্তর এমন ছিল যে, আমাদের দেশে বসবাস করে মাদ্রাসা নিয়ে কেউ লেখালেখি করেছে এবং বর্তমানে বেঁচে আছেন কিংবা স্বাভাবিকভাবেই ঘুরে বেড়াচ্ছে এমন দুইজনের নাম বলুন তো দেখি। তিনি বলতে পারেন নি। তারপর তাকে বললাম, আমি যেহেতু বাহিরে আছি এবং মাদ্রাসার ভেতরের অনেক খবরই জানি, তাই এগুলো নিয়ে লেখালেখি করি। হয়তো দেশে থাকলে আমিও এই কাজটি করতে সাহস পেতাম না।

এরপর আমি তার কাছে জানতে চাইলাম যে আপনারা তো দেখি এখন ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনেও মাঠে আছেন কিন্তু কই আপনাদের তো কখনো মাদ্রাসার বলাৎকার নিয়ে আন্দোলন তো দুরের কথা এইসব বিষয় নিয়ে কখনো কথাও বলতে দেখলাম না। এর পেছনে কারণ কি?
তিনি আমার এই প্রশ্নের তেমন কোনও উত্তর দিতে পারেন নি, বরং আস্তে করে শাক দিয়ে মাছ ঢেকে বিদায় নিয়েছেন।

আপনাদেরকে আমি সর্বশেষ এটিই বলতে চাই, আসলে মাদ্রাসার এইসব এতিম ছেলেদের মনের চাপা কষ্টগুলো খুব কাছ থেকে না দেখলে আপনি কখনোই বুঝবেন না। দূর থেকে দেখে বা শুনে তাদের কষ্টগুলো কখনোই অনুভব করতে পারবেন না। তারা এমনই এক পরিবেশে থাকে যে ঠিকমত কন্নাও করতে পারে না। এবং সেখানে থাকা বেশিরভাগ শিশুদেরই কোনও পরিবার নেই আর যাও দুই চার জনের পরিবার আছে তারা বাসায় গিয়ে অভিযোগ করলেও সেই পরিবারটি ভয়ে কিংবা ধর্মের কারণে কথা বলে না। আর এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই নরপশু হুজুররা দিনের পর দিন বলাৎকার করে আসছে।

আপনারা এরপরও যদি মনে করেন যে আমরা যারা এসব নিয়ে লেখালেখি করছি, এটা ঠিক হচ্ছে না। আমরা কওমী মাদ্রাসাগুলোকে দেখতে পারি না। আমাদের উদ্দেশ্য আসলে ভিন্ন।

সেই তাদেরকে আমি বলবো যে, আপনি যা ইচ্ছা তাই বলতে পারেন। কিন্তু আমি ততদিনই লিখবো, যতদিন হুজুর নামের এইসব নরপশুরা ছোট ছোট নিষ্পাপ শিশুদের সাথে এসব জঘন্য কাজ করবে।

No comments