Header Ads

সর্বশেষ

ধর্ম ও বিজ্ঞানের দ্বন্দ্ব – সংক্ষিপ্ত আলোচনা


ধর্ম ও বিজ্ঞানের মধ্যে প্রধানত দুইটি দ্বন্দ্ব আছে. একটি হলো মানুষের সৃষ্টি তত্ত্ব, অপরটি কসমোলজি বা মহাকাশ তত্ত্ব।

মানুষের সৃষ্টি তত্ত্ব :
———————-
একেশ্বরবাদী তিনটি প্রধান ধর্ম ইহুদী , খ্রীস্টান ও ইসলাম ধর্মে বর্ণিত আছে যে সমস্ত মানব সমাজ আদম ও হাওয়া থেকে পয়দা হয়েছে – আজ থেকে মোটামুটি ৬ থেকে দশ হাজার বছর আগে. আবার এও বলা হয় যে আজ থেকে ৪ হাজার বছর আগে নূহ নবীর আমলে এক বিরাট প্লাবন হয় তখন আনুমানিক ৮০ জন মানুষ এবং একজোড়া করে জীব জন্তু যারা নূহ নবীর কিস্তিতে উঠেছিল তারা ছাড়া পৃথিবীর সকল মানুষ ও প্রাণী প্লাবনে ধ্বংস হয়ে যায়. অর্থাৎ আজকের পৃথিবীর ৭০০ কোটি মানুষ সেই ৮০ জনের বংশধর।( প্রসঙ্গক্রমে বলি, বর্তমান মুসলিম বিশ্বের একজন নামকরা বক্তা  তার বয়ানে নবী মুহাম্মদ থেকে আদম পর্যন্ত ৭৫ বংশধরের নাম মুখস্ত বলেন।)

বিজ্ঞানীরা এতে আপত্তি করেন। মাত্র ৪ হাজার বছরে ৮০ জন থেকে ৭০০ কোটি – তাও আবার ছয়টি মহাদেশে ছড়ানো – এটাকে বিজ্ঞান অসার এবং অসম্ভব বলেন। বরং মানুষ সৃষ্টির পিছনে ডারউইনের জৈবিক বিবর্তনবাদে তারা যুক্তি ও প্রমান দেখান। বৈজ্ঞানিকরা ফসিলে পাওয়া প্রমান থেকে মতামত দেন যে আধুনিক মানুষ বা হোমো স্যাপিয়েন্সের উৎপত্তি আজ থেকে ৪ লক্ষ বছর আগে.এর আগেও নেন্দার্থেল ও হোমো ইরেক্টাস বলে কম বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ ছিল. এক কোষী প্রাণী থেকে বহুকোষী প্রাণী, এভাবে ক্রমান্বয়ে বানর জাতীয় প্রাণী এবং পরিশেষে মানুষের আবির্ভাব হয়েছে। এ বিবর্তন প্রক্রিয়া এখনো চলছে।

বিজ্ঞানীদের মতে ৬ বা দশ হাজার বছর আগের আদম-হাওয়ার গল্প নিতান্তই কল্পনাপ্রসূত এবং সঠিক প্রমানের বিপরীত ধারণা।

কসমোলজি বা মহাকাশ তত্ত্ব:
————————————
কোরানে সাত আসমান আর সাত তবক জমিনের কথা বলা আছে.আকাশ হলো ছিদ্র বিহীন শক্ত ছাদ। খুঁটি ছাড়া ঝুলে আছে. এসব ছয়দিনে তৈরী হয়েছে ঈশ্বর কর্তৃক। এই বর্ণনা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে মোটেই সঠিক নয়. আমরা নীল রঙের যে আকাশ দেখে থাকি তা সূর্য থেকে আসা নীল রঙের আলোর বিচ্ছুরণ। কোনো শক্ত ছাদ নয়.
আমাদের পৃথিবী একটা গ্রহ। এটা নিজের অক্ষের উপর ঘুরছে এবং একই সাথে সূর্য্যের চারিদিকে ঘুরছে। এতেকরে দিন-রাত এবং বছর হচ্ছে।
আমাদের সৌরজগৎ ছায়াপথ নামক গ্যালাক্সিতে আছে. ছায়াপথের মতো আরও ২ ট্রিলিয়ন গ্যালাক্সি আছে মহাবিশ্বে।প্রতিটি গ্যালাক্সিতে আছে গড়পড়তা ১০০ বিলিয়ন টি নক্ষত্র। এর কোথাও শক্ত আকাশের দেখা নাই.

এই বিবরণ ধর্মের (কোরান-হাদীস -বাইবেল-বেদ , ইত্যাদি) বিবরণের সাথে সাংঘর্ষিক।

বৈজ্ঞানিক প্রমানের কাছে ধর্মের হার বহুদিন পূর্বেই হয়ে গেছে। কিন্তু অনেক মানুষ এখনো ধর্মে বিশ্বাস করে কারণ ছোট বেলায় তাদের কে এটা শিখানো হয়.
পৃথিবীতে ৪ হাজারের অধিক ধর্ম আছে. এদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ ধর্ম কে সঠিক বলে জানে। একমাত্র নিজের ধর্মের মানুষই পরকালে মুক্তি পাবে আর বাকি ৩৯৯৯ ধর্মের লোকেরা অনন্তকাল নরকে জ্বলবে।
নৈতিক দিক থেকেও এ যুক্তি পরিত্যাজ্য।

No comments