মুহাম্মদ কি ভন্ড নাকি প্রকৃত নবী?
৭ম শতাব্দিতে মক্কা মদিনায় কুরাইশ পৌত্তলিক, সাবিয়ান, ইহুদি ও খৃষ্টানরা পাশাপাশি শান্তিপূর্ন সহাবস্থান করত। পৌত্তলিক ও সাবিয়ান ধর্মের কোন নবী রসুল ছিল না , কিন্তু ইহুদি ও খৃষ্টান ধর্মের ভিত্তি ছিল নবী রসুল। ইহুদি ও খৃষ্টান ধর্মকে বলা হয় আব্রাহামিক ধর্ম কারন এসবের মূল প্রতিষ্ঠাতা ছিল ইব্রাহিম নবী। পৌত্তলিক গোত্রে জন্মগ্রহন করে মুহাম্মদ নিজেকে আব্রাহামিক ধারায় নবী দাবী করে , পরীক্ষা করে দেখা যাক , মুহাম্মদ আসলেই সেই ধারা মোতাবেক নবী ছিল কি না।
৭ম শতাব্দিতে মক্কা মদিনায় কুরাইশ পৌত্তলিক, সাবিয়ান, ইহুদি ও খৃষ্টানরা পাশাপাশি শান্তিপূর্ন সহাবস্থান করত। পৌত্তলিক ও সাবিয়ান ধর্মের কোন নবী রসুল ছিল না , কিন্তু ইহুদি ও খৃষ্টান ধর্মের ভিত্তি ছিল নবী রসুল। ইহুদি ও খৃষ্টান ধর্মকে বলা হয় আব্রাহামিক ধর্ম কারন এসবের মূল প্রতিষ্ঠাতা ছিল ইব্রাহিম নবী। পৌত্তলিক গোত্রে জন্মগ্রহন করে মুহাম্মদ নিজেকে আব্রাহামিক ধারায় নবী দাবী করে , পরীক্ষা করে দেখা যাক , মুহাম্মদ আসলেই সেই ধারা মোতাবেক নবী ছিল কি না।
আব্রাহামিক ধর্মের নিয়ম ছিল সৃষ্টিকর্তা সময়ে সময়ে নবী বা রসুল পাঠিয়ে বিভ্রান্ত মানুষকে সৎপথে নিয়ে আসে। ঠিক তেমনিভাবেই সৃষ্টিকর্তা বা আল্লাহ ইব্রাহীম , ইসহাক , ইয়াকুব, মুসা, দাউদ , সোলেমান ইত্যাদিকে পাঠায়। পৌত্তলিক কুরাইশ বংশে জন্মলাভ করে মুহাম্মদ নিজেকে সেই আব্রাহামিক ধারার নবী দাবী করে। ইসলামী আলেমরা তৌরাত ইঞ্জিল থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমান করতে চায় যে , তাতে যে নবী আগমনের কথা বলা আছে , সেই ভবিষ্যতের নবীই ছিল মুহাম্মদ। এবার দেখা যাক , তাদের বক্তব্য সঠিক নাকি বেঠিক।
যারা মুহাম্মদকে তৌরাত বর্ণিত ভবিষ্যতের নবী হিসাবে মুহাম্মদকে প্রমান করতে চায় , তাদের মধ্যে বর্তমানে বিখ্যাত ইসলাম প্রচারক আহমদ দিদাত, জাকির নায়েক সহ বহু বিখ্যাত লোকজন আছে। তারা মুহাম্মদকে নবী প্রমানের জন্যে কোরান থেকে আয়াত দেখিয়ে দাবী করে যে মুহাম্মদ সম্পর্কে আগের কিতাব তৌরাত ও ইঞ্জিল – এ বলা আছে যেমন-
সুরা আরাফ- ৭: ১৫৭: সেসমস্ত লোক, যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রসূলের, যিনি উম্মী নবী, যাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়,————-
অর্থাৎ মুহাম্মদ সম্পর্কে আগের কিতাব তৌরাত ও ইঞ্জিলে উল্লেখ আছে। এখন কোথায় সেই উল্লেখ ? ইসলামী পন্ডিতরা তখন তৌরাত থেকে নিচের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমান করতে চায় যে , উক্ত ভবিষ্যতের নবীই হলো মুহাম্মদ । এটা তাদের খবুই জনপ্রিয় একটা উদ্ধৃতি। যেমন –
দ্বিতীয় বিবরনী- ১৮: ১৮: ১৮ আমি তাদের কাছে তোমার মতোই একজন ভাববাদী(নবী) পাঠাব। এই ভাববাদী(নবী) তাদের লোকদের মধ্যেই একজন হবে। সে য়ে কথা অবশ্যই বলবে সেটা আমি তাকে বলে দেব। আমি যা আদেশ করি তার সমস্ত কিছু সে লোকদের বলবে।
যখনই কোন আয়াত দেখিয়ে ইসলাম ধর্মের সমালোচনা করা হয়, তখনই মুমিনরা দাবী করে , উক্ত আয়াতের আগ পিছের আয়াত পড়তে হবে , প্রেক্ষাপট জানতে হবে, আর তাহলেই জানা যাবে সেই আয়াতের প্রকৃত অর্থ। সুতরাং সেই একই বিধান যদি আমরা তৌরাত কিতাবের ক্ষেত্রে ব্যবহার করি , তাহলে আমাদেরকেও উক্ত দ্বিতীয় বিবরনী- ১৮: ১৮ আয়াতের আগে পিছের বাক্য পড়তে হবে , ও একই সাথে উক্ত বাক্যের প্রেক্ষাপট জানতে হবে। আর তাহলেই জানা যাবে উক্ত দ্বিতীয় বিবরনী ১৮:১৮ বাক্যের প্রকৃত অর্থ। সুতরাং আমরা এখন উক্ত ১৮:১৮ বাক্যের প্রেক্ষাপটটা প্রথমে জানি।
মুসা যখন তার গোত্রের লোক অর্থাৎ ইসরাইলিদেরকে মিশর থেকে উদ্ধার করে নিয়ে সিনাই মালভূমিতে আসে তখনই তার ঈশ্বর তাকে উক্ত দ্বিতীয় বিবরনী ১৮:১৮ বানী বলে এবং তখনই ঈশ্বর তাদেরকে বলে তাদেরকে একটা পবিত্র ভূমি দান করা হচ্ছে , যেখানে ইসরাইলিরা তাদের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করবে। সেই পবিত্র ভূমিই হলো আজকের ইসরাইল সহ জর্ডান , সিরিয়া ইত্যাদির অংশ। এই কথাটা কোরানেও আছে , যেমন —
সুরা মায়দা- ৫: ২০:যখন মূসা স্বীয় সম্প্রদায়কে বললেনঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামত স্মরণ কর, যখন তিনি তোমাদের মধ্যে পয়গম্বর সৃষ্টি করেছেন, তোমাদেরকে রাজ্যাধিপতি করেছেন এবং তোমাদেরকে এমন জিনিস দিয়েছেন, যা বিশ্বজগতের কাউকে দেননি।
২১: হে আমার সম্প্রদায়, পবিত্র ভুমিতে প্রবেশ কর, যা আল্লাহ তোমাদের জন্যে নির্ধারিত করে দিয়েছেন এবং পেছন দিকে প্রত্যাবর্তন করো না। অন্যথায় তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
সুরা ইউনুস- ১০:৯৩: আর আমি বনী-ইসরাঈলদিগকে দান করেছি উত্তম স্থান এবং তাদেরকে আহার্য দিয়েছি পবিত্র-পরিচ্ছন্ন বস্তু-সামগ্রী। বস্তুতঃ তাদের মধ্যে মতবিরোধ হয়নি যতক্ষণ না তাদের কাছে এসে পৌছেছে সংবাদ। নিঃসন্দেহে তোমার পরওয়ারদেগার তাদের মাঝে মীমাংসা করে দেবেন কেয়ামতের দিন; যে ব্যাপারে তাদের মাঝে মতবিরোধ হয়েছিল
উক্ত সেই পবিত্র ভূমিতে প্রবেশ করার আগে , ঈশ্বর মূসা ও তার গোত্রের লোকদেরকে উক্ত দ্বিতীয় বিবরনী ১৮:১৮ বাক্য বলে সান্তনা দিচ্ছে এই বলে যে , তাদের ভয়ের কোন কারন নেই , তারা ভবিষ্যতে যদি বিপথে চালিত হয়, তাহলে তাদেরকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্যে তাদের গোত্রে বা তাদের ভাইতের মধ্য হতে মূসার মতই আর একজন নবী পাঠান হবে।
এখন প্রশ্ন হলো মুসার গোত্র বা ভাই কারা ? এটার উত্তর কিন্তু সোজা। সেটা হলো , সেই তখন সিনাই মালভূমিতে মুসার সাথে যারা ছিল , তারাই হলো মুসার গোত্র বা ভাই। তো কারা সেই সময় মূসার সাথে ছিল ? সেটা জানতে হলে একটু পিছনে যেতে হবে।
তৌরানে বর্নিত আছে, আর কোরান হাদিসেও বলা হয়েছে – ইব্রাহীমের দুই ছেলে ছিল- ইসমাইল ও ইসহাক। শিশু বয়সে ইব্রাহীম ইসমাইলকে তার মা সহ নির্বাসন দেয়। সাথে থাকে ইসহাক। ইসহাকের এক ছেলের নাম ইয়াকুব। এই ইয়াকুবকেই ঈশ্বর নাম পরিবর্তন করে তার নাম রাখে ইসরাইল , সেটা দেখা যাবে —
আদি পুস্তক- ৩৫: ১০ ঈশ্বর যাকোবকে বললেন, “তোমার নাম যাকোব কিন্তু আমি তোমার অন্য নাম রাখব। এখন থেকে তোমাকে যাকোব বলে ডাকা হবে না, তোমার নাম হবে ইস্রায়েল।” তাই ঈশ্বর তার নাম রাখলেন ইস্রায়েল।
১১ ঈশ্বর তাকে বললেন, “আমিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এবং আমি তোমায় এই আশীর্বাদ করছি। তোমার অনেক সন্তান-সন্ততি হোক, এক মহাজাতি হয়ে বেড়ে ওঠো। তোমার থেকেই অন্য অনেক জাতি এবং রাজারা উত্পন্ন হবে।
১২ আমি অব্রাহাম ও ইসহাককে য়ে দেশ দিয়েছিলাম সেই দেশই এখন তোমায় দিচ্ছি। তোমার পরে তোমার বংশধরদের আমি সেই দেশ দিচ্ছি।”
পূর্বে ইব্রাহীম ও ইসহাক যে যেরুজালেম সহ আশপাশে বাস করত , ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ইয়াকুব তথা ইসরাইলের বংশধরদেরও সেই দেশ দেয়া হবে। এর বহু শত বছর পরে মূসার নেতৃত্বেই বনি ইসরাইলিরা সেই দেশ দখল করে ও তাদের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। তাহলে ইসরাইলিরা কারা ? ইসরাইলিরা হলো ইয়াকুব বা ইসরাইলের বংশধর। ইয়াকুব বা ইসরাইলের ছিল বারটা পুত্র , সেই পুত্র থেকে যে বংশধারার সৃষ্টি হয় , তাদের সবাইকেই বলা হয় ইসরাইলি। ইসরাইলের সেই বারটা পুত্র এক দুর্ভিক্ষের সময় জেরুজালেম ত্যাগ করে , তাদের সন্তান সন্ততি পরিবার পরিজন সহ মিশরে চলে যায় , আর সেখানেই তারা মিশরের ফেরাউনদের অধীনে দাস দাসীর মত জীবন কাটাতে থাকে। এরও বহু শত বছর পরে , সেই ইসরাইলি বংশে মূসা নবীর আগমন ঘটে আর তার নেতৃত্বেই অবশেষে ইসরাইলিরা মিশর ত্যাগ করে আবার জেরুজালেমে ফিরে আসে। পথিমধ্যে সিনাই মালভূমিতেই ঈশ্বর মুসাকে উক্ত দ্বিতীয় বিবরনী ১৮:১৮ বাক্যের মাধ্যমে ভবিষ্যতে ইসরাইলি বংশে তথা যারা সেই সময় মূসার সাথে ছিল তাদের মধ্য থেকে এক নবীর আগমন ঘটাবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়।
সুতরাং বিষয়টা হলো – মূসার ভাইরা হলো সেই ইসরাইলি বংশের সন্তানরা , অন্য কেউ না। সেই ইসরাইলি বংশ হলো ইয়াকুব বা ইসরাইলের বার পুত্র থেকে জন্ম নেয়া বংশধারা, অন্য কেউ না।
অথচ মুসলমানরা দাবী করে , মুহাম্মদ হলো ইসমাইলের বংশধর। যদিও সেটা কোনভাবেই প্রমান করা সম্ভব না , তারপরেও যুক্তির খাতিরে ধরে নেয়া হলো যে মুহাম্মদ হলো ইসমাইলের বংশধর , তারপরেও বলতে হবে , ইসমাইলের বংশধর তো কোনভাবেই ইসরাইলি না। অথচ তৌরাতে বলছে উক্ত ইসরাইলি বংশ থেকেই ভবিষ্যতের নবী আসবে। ইব্রাহীমের বংশধরকে ইসরাইলি বলে না , ইসহাকের বংশধারাকে ইসরাইলি বলে না , এমন কি ইসহাকের ছেলেদের মধ্যে একমাত্র ইয়াকুবের বংশধারা ছাড়া অন্য কোন পুত্রের বংশধারাকেও ইসরাইলি বলে না। ইসরাইলি বলা হয় , শুধুমাত্র ইয়াকুব বা ইসরাইলের বংশধারাকে। তাহলে ইসমাইলের বংশধারায় যদি মুহাম্মদের জন্ম হয় , তাহলে সে কিভাবে ইসরাইলি বংশোদ্ভুত হবে ?
সুতরাং প্রেক্ষাপটের বিচারে , দেখা যাচ্ছে , উক্ত দ্বিতীয় বিবরনীর ১৮:১৮ বাক্যে কথিত সেই ভবিষ্যৎ নবী, কোনভাবেই মুহাম্মদ হতে পারে না। কারন মুহাম্মদ কোনভাবেই ইসরাইলি বংশধারার নয়।
এবার উক্ত দ্বিতীয় বিবরনীর ১৮:১৮ বাক্যের পরের কিছু বাক্য দেখা যাক —-
দ্বিতীয় বিবরনী- ১৮: ১৯ এই ভাববাদী আমার জন্যই বলবে এবং যখন সে কথা বলবে, যদি কোন ব্যক্তি আমার আদেশ না শোনে তাহলে আমি সেই ব্যক্তিকে শাস্তি দেব।’
২০ “কিন্তু একজন ভাববাদী এমন কিছু বলতে পারে যা আমি তাকে বলার জন্য বলি নি। এবং সে লোকদের এও বলতে পারে য়ে সে আমার হয়েই তা বলছে। যদি এরকম ঘটনা ঘটে তাহলে সেই ভাববাদীকে অবশ্যই হত্যা করা উচিত্। এছাড়াও একজন ভাববাদী আসতে পারে য়ে অন্যান্য দেবতার হয়ে কথা বলে। সেই ভাববাদীকেও অবশ্যই হত্যা করা উচিত্।
২১ তোমরা হয়তো ভাবতে পার, ‘আমরা কি করে জানতে পারবো য়ে ভাববাদী যা বলছে সেগুলো প্রভুর কথা নয়?’
২২ যদি কোনো ভাববাদী বলে য়ে সে প্রভুর জন্য বলছে, কিন্তু যা বলছে তা না ঘটে, তাহলেই তোমরা জানবে য়ে প্রভু সেটি বলেন নি। তোমরা বুঝতে পারবে য়ে, এই ভাববাদী তার নিজের ধারণার কথাই বলছে। তোমরা তাকে ভয় পেও না।
দেখা যাচ্ছে , নিজেকে যে নবী দাবী করবে অথচ সে ইসরাইলি বংশধারার নয় , সে হবে ভুয়া নবী আর তাকে শাস্তি প্রদান করা হবে। এখন আমরা মুহাম্মদের ক্ষেত্রে কি ঘটেছিল সেটা জানার চেষ্টা করি। আমরা জানি মুহাম্মদ ৬২/৬৩ বছর বয়েসে মারা গেছিল। কিন্তু অনেকেই জানি না যে তার অত্যন্ত যন্ত্রনাদায়ক কষ্টকর মৃত্যূ ঘটেছিল। হাদিস থেকে দেখা যাক , কিভাবে তার মৃত্যু ঘটেছিল।
সহিহ বুখারী :: খন্ড ৪ :: অধ্যায় ৫৩ :: হাদিস ৩৯৪
আবদুল্লাহ ইব্ন ইউসুফ (র)…………….আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন খায়বার বিজিত হয়, তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে একটি (ভুনা) বকরী হাদীয়া দেওয়া হয়; যাতে বিষ ছিল। ————— তারপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, ‘আমি যদি তোমাদের একটি প্রশ্ন করি, তোমরা কি তার সঠিক উত্তর দিবে? তারা বলল, হ্যাঁ, আবুল কাসিম!’ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি এ বকরীটিতে বিষ মিশিয়েছ?’ তারা বলল, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘কিসে তোমাদের এ কাজে উদ্বুদ্ধ করল?’ তারা বলল, ‘আমরা চেয়েছী আপনি যদি মিথ্যাবাদী হন, তবে আমরা আপনার থেকে স্বস্তি লাভ করব আর আপনি যদি নবী হন তবে তা আপনার কোন ক্ষতি করবে না।’
সহিহ মুসলিম :: বই ২৬ :: হাদিস ৫৪৩০(ইসলামিক ফাউন্ডেশন হাদিস নং- ৫৫১৭)
আনাস (রা) বর্ণনা করেন, এক ইহুদী নারী রাসূলুল্লাহ্(সা) কাছে বিষ মিশানো বকরীর গোশত নিয়ে আসল। তিনি তা থেকে খেলেন। অতঃপর সেই স্ত্রীলোকটিকে রাসূলুল্লাহ্(সা) এর কাছে হাযির করা হল। তিনি তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেন। সে বলল, আমি আপনাকে হত্যা করতে চেয়েছিলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ তোমাকে এই শক্তি দেননি। আলী (রা) কিংবা সাহাবীগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা কি একে হত্যা করব? তিনি বললেনঃ না, বর্ণনাকারী বলেন, আমি সবসময়ই রাসূলুল্লাহ্(সা) এর মধ্যে এই বিষের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেছি।
তার মানে দেখা যাচ্ছে , মুহাম্মদকে বিষ মেশান গোস্ত খাওয়ানোর ফলে তার মুখে সর্বদাই বিষের প্রতিক্রিয়া ছিল। এই প্রতিক্রিয়ায় মুহাম্মদের কি অবস্থা হয়েছিল , সেটা জানা যাবে নিচের হাদিসে —-
মাগাজী অধ্যায় , বুখারি: খন্ড-৫৯: অধ্যায়-৫৯: হাদিস – ৭১৪:
আয়শা(রা:) থেকে বর্ণিত- নবীর মৃত্যু শয্যায় যাতে তিনি মারা যান , তিনি প্রায়ই বলতেন – ও আয়শা , আমি এখনও খায়বারে বিষ মিশ্রিত খাবার খাওয়ার কারনে প্রচন্ড যন্ত্রনা ভোগ করছি , আর আমার ঘাড় থেকে ধড় যেন আলাদা হয়ে যাচ্ছে।
মাগাজী অধ্যায় ::সহিহ বুখারী :: খন্ড ৫ :: অধ্যায় ৫৯ :: হাদিস ৭২৭
হযরত সাঈদ ইবন উফায়র (রঃ)……… রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর সহধর্মিনী হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর রোগ প্রবল হলো ও ব্যাথা তীব্র আকার ধারন করল, তখন তিনি আমার ঘরে সেবা-শুশ্রুষা করার ব্যাপারে তাঁর বিবিগনের নিকট অনুমতি চাইলেন। তখন তাঁরা তাঁকে অনুমতি দিলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) ঘর থেকে বের হয়ে ইবন আববাস (রাঃ) ও অপর একজন সাহাবীর সাহায্যে জমীনের উপর পা হিঁচড়ে চলতে লাগলেন।———–
তার মৃত্যু যন্ত্রনা এতটাই কঠিন ও যন্ত্রনাদায়ক ছিল যে আয়শা নির্দ্বিধায় বলেছে —
মাগাজী অধ্যায় ::সহিহ বুখারী :: খন্ড ৫ :: অধ্যায় ৫৯ :: হাদিস ৭২৬
হযরত আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (রঃ)……… হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর এমন অবস্থায় ওফাত হয় যে, আমার বুক ও থুতনির মধ্যস্থলে তিনি হেলান দেওয়া অবস্থায় ছিলে। আর রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর মৃত্যু-যন্ত্রনার পর আমি আর কারো জন্য মৃত্যু-যন্ত্রনাকে কঠোর বলে মনে করিনা।
আয়শা বলছে মুহাম্মদের মত মৃত্যু যন্ত্রনা এতটাই কঠোর ছিল যে পরবর্তীতে আর কারও মৃত্যু যন্ত্রনা তার কাছে কঠোর বলে মনে হয় নি।
তার মানে দেখা যাচ্ছে তৌরাতে যে বলা হয়েছে যদি কেউ ঈশ্বরের নামে নিজের বানান মনগড়া কথা বার্তা বলে , তাকে ঈশ্বর শাস্তি দেবে, আর সেই শাস্তিই মুহাম্মদ মরার সময় পেয়েছে কঠিন কঠোর যন্ত্রনাদায়ক মৃত্যুর মাধ্যমে যা ছিল প্রচন্ড অপমানকর। আল্লাহর কথিত শেষ ও সর্বশ্রেষ্ট নবী যে কিনা মারা গেছিল মাত্রই ৬৩ বছর বয়েসে , সে যে ধরনের অপমানকর , কঠোর যন্ত্রনাময় মৃত্যু বরন করেছিল , তা যেন কাকতালীয়ভাবে তৌরাতের বিবরনের সাথে মিলে যাচ্ছে। যা প্রমান করে , মুহাম্মদ ছিল স্রেফ একটা ভন্ড নবী , যে নিজের কামনা বাসনা চরিতার্থ করার জন্যেই নিজের কথাবার্তাকে ঈশ্বরের নামে চালিয়েছিল। ইসলামী আলেমরা বাইবেলের যে অংশ দ্বারা প্রমান করতে চায় যে মুহাম্মদ ছিল বাইবেলে কৃত ভবিষ্যদ্বানী অনুযায়ী নবী , ঠিক সেই একই অংশ আসলে প্রমান করে , মুহাম্মদ ছিল সত্যিকার একজন ভন্ড নবী।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে , আব্রাহামিক ধারার ধর্ম অনুযায়ী নিজেকে নবী প্রমান করতে ভীষণভাবেই ব্যর্থ হয়েছে কথিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মহামানব ও নবী মুহাম্মদ।
No comments