Header Ads

সর্বশেষ

থমকে গেল অভিযান!


রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবে, বারে ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বাসায় একযোগে র‌্যাব-পুলিশের অভিযানে জনমনে স্বস্তি ছড়িয়ে পড়লেও হঠাৎ যেন থমকে গেছে এ অভিযান! টানা দুই-তিন দিন এ নিয়ে দেশব্যাপী তুমুল আলোচনা হলেও হঠাৎ করে যেন ঝিমিয়ে গেছে সবাই। এর ফলে জনমনে দেখা দিয়েছে কৌতূহলী প্রশ্ন।

বড় কোনো ঝড়ের আগে যেমন করে আকাশ থমকে থাকে তেমনি হয়তো বড় কোনো অভিযানের প্রস্তুতি নিতেই এ নীরবতা বলছেন বিশ্লেষকরা। এদিকে উত্তরা র‌্যাব-১-এর কার্যালয়ে যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া ওরফে খালেদ, জি কে বিল্ডার্সের স্বত্বাধিকারী জি কে শামীম এবং কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবের সভাপতি শফিকুল আলম ওরফে ফিরোজ আলমকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনই নতুন নতুন তথ্য দিচ্ছেন। ক্যাসিনো ও টেন্ডারবাজি করে তারা কত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন— সে বিষয়ে একটা তালিকা করা হচ্ছে।

এ ছাড়া টেন্ডারবাজি ও ক্যাসিনোর টাকার কমিশন কারা পেতেন— সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তারা অনেকের নাম বলেছেন। কমিশন নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বেশকিছু সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রী-এমপির নাম রয়েছে।
এই তালিকায় রাজধানীর বিএনপি ও যুবদলের বিভিন্ন ইউনিটের শীর্ষ পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নামও রয়েছে। বিশেষ করে যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এই মামলাগুলো পরিচালনা করতে গিয়ে তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো নেই। তাই মাঝেমধ্যেই বিএনপির এসব নেতা জি কে শামীম ও ল্যাংড়া খালেদের কাছ থেকে টাকা নিতেন। দুবাইয়ে আত্মগোপন করা শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সঙ্গে খালেদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকার তথ্যও মিলেছে। জিজ্ঞাসাবাদ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ ব্যাপারে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘আমরা তাদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। অনেক বিষয় নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাবে।’

শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল খালেদের: সূত্র জানায়, উত্তরা র‌্যাব-১-এর কার্যালয়ে যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া ওরফে খালেদ, জি কে বিল্ডার্সের স্বত্বাধিকারী জি কে শামীম এবং কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবের সভাপতি শফিকুল আলম ওরফে ফিরোজ আলমকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনই নতুন নতুন তথ্য দিচ্ছেন। খালেদ তার অস্ত্র ভাণ্ডারের ব্যাপারে বেশকিছু তথ্য দিয়েছে। তবে তার কাছে একে-২২ রাইফেল থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে উদ্ধার হওয়া দুটি একে-২২ রাইফেল তার নয় বলে জানিয়েছেন।

জানা গেছে, বছরখানেক আগে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট খালেদকে দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করেন। এর জের ধরে তাদের মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়। সম্রাটের সন্দেহ ছিল, সিঙ্গাপুরের ম্যারিনা বে স্যান্ডস হোটেলে খালেদ ও জিসানের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। জিসান ঢাকার ক্যাসিনোর চাঁদাবাজির কমিশন হিসাবে সম্রাটের কাছে ১০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। এর জের ধরে সম্রাট খালেদকে বহিষ্কার করে। র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে খালেদ এসব তথ্য জানিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

খোঁজ নেই সম্রাটের: যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে গত দুদিন ধরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের কোনো যোগাযোগ নেই বলে জানা গেছে। দলীয় শীর্ষ নেতাদের ধারণা, সম্রাট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরবন্দিতে আছেন অথবা আত্মগোপন করেছেন। সম্রাট এখন দল থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। তার সঙ্গে দলের কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মীরই যোগাযোগ নেই। সম্রাটের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোই এখন ভালো বলতে পারবে। তবে সম্রাট কোথায় আছেন- সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সংস্থাই এখনো পর্যন্ত খোলাসা করে কিছু বলছেন না।
এদিকে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালক লোকমান হোসেন ভুঁইয়াকে তেজগাঁও থানায় দায়ের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলায় ২ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এ ব্যাপারে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, তেজগাঁও থানা হেফাজতে রেখে লোকমান ভুঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

No comments